বরিশালে মাদ্রাসা শিক্ষককে লাঞ্ছিত করে ফেসবুকে ভাইরাল

লাঞ্ছিত করে তা মুঠফোনে ভিডিও ধারন করা হয়েছে বরিশালের মেহেন্দিগঞ্জে জনৈক এক মাদ্রাসা শিক্ষকের। 

হাত বেধে গলায় জুতার মালা পরিয়ে আটকিয়ে রাখা হয়েছিলো তাকে। তিনি স্থানীয় দড়িচর খাজুরিয়া দাখিল মাদ্রাসার ষাটোর্ধ্ব শিক্ষক আলাউদ্দিন হুজুর। এই ঘটনা ঘটান দড়িচর খাজুরিয়া ইউনিয়ন চেয়ারম্যান মোস্তফা রাঢ়ী। 
বুধবার সকালের ইউনিয়ন পরিষদে এই ন্যাক্কারজনক ঘটনা ঘটলে রাতে সামাজিক যোগযোগ মাধ্যম ফেসবুকে তা ছড়িয়ে পড়লে শুরু হয় তোলপাড়। ঘণ্টাখানেকের মধ্যে ভিডিওটি হাজার হাজার লাইক, ফেসবুক ব্যবহারকারীদের প্রতিবাদী কমেন্ট ও শেয়ারে করা হয়। কমেন্টে অনেকেই এই ঘটনায় জড়িতদের শীঘ্রই গ্রেপ্তারপূর্বক আইনের আওতায় নিয়ে আসার দাবি করেছেন। রাতেই ভাইরাল এই ভিডিওটি সম্পর্কে মেহেন্দিগঞ্জ থানা পুলিশ অবগত হয়েছে বলে জানা গেছে।
থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আবিদুর রহমানের জানান, ভিডিওটি ফেসবুক থেকে সংরক্ষণ করা হয়েছে। এখন বিস্তারিত জানার চেষ্টা করছেন।
স্থানীয় একটি সূত্র জানাযায়, খাজুরিয়া দাখিল মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তির টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠলে বুধবার স্থানীয় এমপি পঙ্কজ দেবনাথের ক্যাডার হিসেবে পরিচিত ইউনিয়ন চেয়ারম্যান মোস্তফা রাঢ়ী সালিশ বৈঠকে বসেন। সেখানে উপস্থিত ছিলেন শহীদ ও ফিরোজ মেম্বারও। তাদের উপস্থিতিতে সালিশীর একপর্যায়ে শিক্ষক ও স্থানীয় একটি মসজিদের ইমাম আলাউদ্দিনকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয় এবং তা তাৎক্ষনিক পরিশোধের জন্য চাপ দেওয়া হয়। জরিমানার এই অর্থ তাৎক্ষণিক দিতে না পারায় ইউনিয়ন পরিষদের ভেতরে সকলের সামনে প্রথমে তার হাত বেঁধে মারধর করা হয় এবং পরে গলায় জুতার মালা পরিয়ে লাঞ্ছিত করা হয়।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন প্রত্যক্ষদর্শী জানায়, জুতার মালা দিয়ে চেয়ারম্যান নিজেই ভিডিও করার নির্দেশ দেন। এসময় একজন ভিডিও করতে নিষেধ করলে চেয়ারম্যান তাকেও হুমকি দেন এবং অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে বলে আমি কাউকে ভয় পাইনা। এমন ঘটনার পর থেকে লোকলজ্জার ভয়ে মাদ্রাসাশিক্ষক আত্মগোপন করে আছেন। 
এদিকে ‘নির্যাতন-সন্ত্রাস-দুর্নীতি-মাদক প্রতিরোধ কমিটি’ লেখা সংবলিত ভিডিওটিতে চেয়ারম্যান ও তার সহযোগীদের স্থানীয় এমপি পঙ্কজ দেবনাথের ক্যাডার বলে অ্যাখ্যায়িত করে মাদ্রাসাশিক্ষককে বেইজ্জতি করার ওই ভিডিও স্থানীয় এক ব্যক্তি তার ব্যক্তিগত ফেসবুক আইডিতে বুধবার রাত ৯টার দিকে পোস্ট করেন এবং ঘটনা তদন্তপুর্বক জড়িতদের আইনের আওতায় নিয়ে আসার দাবি করেন।


এই বিষয়ে চেয়ারম্যান মোস্তফা রাঢ়ীর মুফোঠোনে জানতে চাইলে তিনি ঘটনাটি সঠিক বলে অকপটে স্বীকার করেন। তিনি  দম্ভোক্তির সুরে মন্তব্য করেন - সালিশ বৈঠকের রায় অনুযায়ী গলায় জুতার মলা পরানো হয়েছে। এতে যদি তার জেল বা সাজা হয় হবে, তাতে তার কিছু যায় আসে না। তিনি আরো বলেন  এই ঘটনায় তিনি একা জড়িত নন, দুই মেম্বর শহীদ ও ফিরোজও জড়িত ছিলেন।’

কোন মন্তব্য নেই

Please do not enter any spam link in the comment box.
Thank you

Blogger দ্বারা পরিচালিত.